শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১২ পূর্বাহ্ন

নোটিশ :
✆ন্যাশনাল কল সেন্টার:৩৩৩| স্বাস্থ্য বাতায়ন:১৬২৬৩|আইইডিসিআর:১০৬৬৫|বিশেষজ্ঞ হেলথ লাইন:০৯৬১১৬৭৭৭৭৭
সংবাদ শিরোনাম
বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইসহাক এর দাফন সম্পন্ন ঈদ মুবারক চট্টগ্রামে একুশের কণ্ঠ’র ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত বান্দরবানে কম্বিং অপারেশন শুরু : সেনাপ্রধান শবেকদর সম্পর্কে কোরআন-হাদিসে যা বলা হয়েছে মক্কায় ব্যবসায়ী আলহাজ্ব আবদুল হাকিমের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল আমুচিয়া ইউনিয়নের ইমাম, মোয়াজ্জিনদের মাঝে প্রবাসী এমদাদুল ইসলামের ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ জেলা প্রশাসকের নিকট বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার স্মৃতি পরিষদ’র স্মারকলিপি প্রদান বোয়ালখালীতে জোরপূর্বক জায়গা দখলের পাঁয়তারা অনেকটা অভিমান নিয়েই যেন চলে গেলেন মোহাম্মদ ইউসুফ : ক্রীড়াঙ্গনে শোকের ছায়া

সেই ভূমি দস্যু আহমেদ হোসেন প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার

ফেইসবুকে নিউজটি শেয়ার করুন...

আর ডি রুবেল:
প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতি মামলায় চট্টগ্রাম নগরীর লালদীঘি পাড়ের ওরিয়েন্ট টাওয়ারের মালিক এসএম আহমেদ হোসেনকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় টেরিবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) নেজাম উদ্দীন বলেন, ‘আবদুস সবুর নামের এক ব্যক্তির সাথে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করেন এসএম আহমেদ হোসেন। এই ঘটনায় আবদুস সবুর আদালতে একটি প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা করেন। গত মঙ্গলবার আদালত থেকে একটি ওয়ারেন্ট পাঠানো হয়। ওই ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে গত বুধবার সকালে টেরিবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করি।’
জানা যায়, ২০০০ সালের ৩০ মে ডেভেলপার ব্যবসায়ী হাজী আব্দুস সবুরের সাথে বাদীর একটি ভূমি উন্নয়ন চুক্তি হয়। ওই চুক্তির ৩ নম্বর সাক্ষী ও মূল ডেভেলপার হাজী সবুরের ওয়ার্কিং পার্টনার ছিলেন এ মামলার ১ নম্বর বিবাদী আহমেদ হোসেন। তারপর জালিয়াতির মাধ্যমে জাল দলিল তৈরি করে বর্তমানে তিনি নিজেই ওই টাওয়ার এর মালিক সেজে প্রতারণার মাধ্যমে ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে ভাড়া তুলে ১০ লাখ টাকা এবং সেলামী বাবদ ১ কোটি ৯০ লাখ টাকাসহ সর্বমোট ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।
এছাড়া লালদীঘি মোড়ের ওরিয়েন্ট টাওয়ারটি একটি অবৈধ ভবন। নানা অনিয়ম নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ভবনটি। ভবনের প্রকৃত মালিকদের নানা হুমকি-ধমকি ও জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে ভবনটি দখল করে রেখেছে এস এম আহমদ হোসেন নামের এ ভূমি দস্যু। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এর কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে ঘুষ দিয়ে অবৈধ এ ভবনটি দখল করে রেখেছে আহমদ হোসেন। সিডিএ অনেক আগেই ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনটি অপসারণের নির্দেশ দিলেও সিডিএ’র কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে উৎকোচ দিয়ে ভবনটির সকল কাগজপত্র সিডিএ থেকে গায়েব করে ফেলেছেন আহমদ হোসেন। এছাড়া ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ভবনটি অপসারণ না করার জন্য হাইকোর্ট থেকে নিয়ে এসেছেন নিষেধাজ্ঞা। ফলে জমির প্রকৃত মালিক ও ওয়ারিশরা আহমদ হোসেনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।
জানা যায়, ওরিয়েন্ট টাওয়ারটি যে জায়গার উপর দাঁড়িয়ে আছে ওয়ারিশ সূত্রে জায়গাটির মালিক আরিফ মইনুদ্দিন ও মো. ফখরুদ্দিন। তবে ফখরুদ্দিন থেকে তার অংশ কিনে নেয় বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর চট্টল শার্দুল নামে খ্যাত এম এ আজিজের সেজ পুত্র শওকত ওসমান। এদিকে ওরিয়েন্ট টাওয়ার বানানোর কথা বলে আরিফ মইনুদ্দিনের সাথে একটি চুক্তি করে আহমদ হোসেন। চুক্তি অনুসারে টাওয়ারের দ্বিতীয় তলার মালিকানা দেয়া হয় আরিফ মইনুদ্দিনকে। কিন্তু নীতিমালা অনুসারে ভবনের উপর তালা বাড়াতে হলে সব মালিকের অনুমতি প্রয়োজন। কিন্তু অবৈধভাবে ওরিয়েন্ট টাওয়ার ৬ তলা থেকে ৯ তলায় রূপান্তর করলেও আরিফ মইনুদ্দিনের কাছে বিষয়টি গোপন রাখে আহমদ হোসেন। তিনি জাল কাগজপত্র তৈরি করে ও আরিফ মইনুদ্দিনের স্বাক্ষর জাল করে সিডিএ এর কাছে ৬ তলা থেকে ৯ তলার অনুমোদন চাইলেও সিডিএ কাগজপত্র যাচাই করে অনুমতি দেয় না। উল্টো ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ও যেকোন মুহূর্তে ভবনটি ধরে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় পুরো ভবনটিই অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয় সিডিএ থেকে। কিন্তু আহমদ হোসেন সিডিএ’র আইন কর্মকর্তা মো. ইলিয়াছ ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী মো. আবু সৈয়দ ও মো. সেলিমকে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে সিডিএতে থাকা ওরিয়েন্ট টাওয়ারের নকশা ও অন্যান্য কাগজপত্র গায়েব করে ফেলে।
এদিকে, আহমদ হোসেনের নামে ভূমি দখল ছাড়াও প্রতারণা, চেক জালিয়াতি ও হত্যার নির্দেশদাতাসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে র‍্যাব-৭ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। তবে র‍্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে জেল থেকে ছাড়া পায় সে। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী মো. মহসিনের কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে ৪৫ লাখ টাকা নিয়েছিল আহমদ হোসেন। পরে মহসিন তার কাছ থেকে ব্যবসার লভ্যাংশ চাইতে গেলে আহমদ হোসেন তাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে র‍্যাবের কাছে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এছাড়া ওরিয়েন্ট টাওয়ারের পাশ্ববর্তী ভবন আমান আলী টাওয়ারের ব্যবসায়িক অংশীদার সৈয়দ নূর, মোজাফফর আহমদ ও সৈয়দ হোসেনকেও একই কায়দায় ভয় দেখালে এবং সন্ত্রাসী দিয়ে গুম করাবে বলে হুমকি দিলে তারা ২০১৮ সালের ১৩ জানুয়ারি কোতোয়ালী থানায় একটি জিডি করেন। এ ঘটনার পর ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে আমান আলী টাওয়ারের সামনে টাওয়ারের কর্মচারী তপন মিয়াকে নিজ সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করায় আহমদ হোসেন। তবে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ওই হত্যাকান্ডের এজাহার থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করিয়ে নেয় সে। তপনকে খুনের পর আমান আলী টাওয়ারের মালিকদের ফোন করে এ খুন থেকে শিক্ষা নেয়ার কথা বলে আহমদ হোসেন। তার বিরোধিতা করলে কি পরিণতি হবে সে বার্তা পৌঁছে দেয় অন্যদের কাছে।

ফেইসবুকে নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মন্তব্য লিখুন


Archive

© All rights reserved © 2021 Dainiksomor.net
Design & Developed BY N Host BD