বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন
আইয়ুব আলী:
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে ৪ দাবি পূরণে আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আজ রোববার ১২ ঘন্টা পর পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত ঘোষনা করেছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ। বিষয়টি নিশ্চিত করে মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মো. মুছা ৪ দফা দাবী পূরণে জেলা প্রশাসনের আশ প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমকে রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে জানান।
এর আগে ধর্মঘট চলাকালে গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সঙ্গে ৪ দফা দাবি নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘সম্প্রতি চুয়েটে একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহত ও এক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনটি বাস পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। এসব বাসের ক্ষতিপূরণ দাবি করছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গনপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। জেলা প্রশাসক মহোদয়ও বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট দাবি ছাড়া অন্য দাবিগুলো খুব দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। কিন্তু এরপরেও তারা আমাদের আরও দুটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। আমরা এ তিনটি গাড়ির ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধি অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও রাউজান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের প্রতিনিধি, বিআরটিসির সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার উর্থি প্রমুখ।
এদিকে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চুয়েটে গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদসহ ৪ দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘট শুরু হয় গতকাল রোববার ভোর ৬টা থেকে। এ কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় বাসসহ বিভিন্ন গণপরিবহনের সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে কম। এই পরিস্থিতিতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। মোড়ে মোড়ে বিভিন্ন গন্তব্যমুখী মানুষের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। অনেক দিন পর স্কুল, কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গতকাল খুলেছে। অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সময় মতো যেতে পারেননি।
এছাড়া তিন পার্বত্য জেলা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলাগামী রুটেও বাস চলাচল বন্ধ ছিল। রাস্তায় পরিবহন না থাকায় তপ্ত রোদের মধ্যে পায়ে হেঁটে বিভিন্ন জায়গায় যেতে মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে। একদিকে তীব্র গরম অন্যদিকে গাড়ি সংকটের জন্য ক্ষোভ ঝেড়েছেন সাধারণ মানুষ। অবশ্য পিকআপ-সিএনজি-টেম্পো ও পণ্য পরিবহন মালিক-চালক ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশ অটোরিকশা হালকা যান পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এ ধর্মঘট প্রত্যাখ্যান করায় চলছে কিছু যানবাহন। নগরীর মুরাদপুর, চকবাজার, বহদ্দারহাট, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, অক্সিজেন, নিউমার্কেট, জিইসি, অলঙ্কার মোড়, টাইগারপাসসহ বিভিন্ন স্থানে তীব্র গরমের মধ্যে গাড়ি না পেয়ে মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ধর্মঘটে বারইয়ারহাট বাসস্ট্যান্ড, চট্টগ্রাম নগরীর মাদারবাড়ি ও কোতয়ালী বাস স্ট্যান্ড থেকে সকাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। বন্ধ ছিল মহাসড়কে চলাচল করা লেগুনা ও সেইফ লাইন পরিবহনের গাড়িও।
চট্টগ্রাম, ২৮.০৪.২০২৪ ইং।
আপনার মন্তব্য লিখুন