সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩, ১০:৪৯ অপরাহ্ন
মিনহাজুল ইসলাম মাসুম :
সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং বা সংক্ষেপে সিআরবি নিয়ে চট্টগ্রামসহ সারাদেশ এই কঠোর লকডাউনকালেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সিআরবি বাংলাদেশ রেলওয়ের (পূর্বাঞ্চলীয়) মহাব্যবস্থাপকের নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়, যা ১৮৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বন্দর নগরীর এটি একটি প্রাচীনতম ভবন। ঐতিহ্যের এক বিরাট স্থাপনা। সম্প্রতি ইউনাইটেড গ্রুপের একটি হাসপাতাল নির্মাণ করার জন্য সরকারের অনুমতি পায়, এ নিয়ে চট্টগ্রামবাসীর মনে ক্ষোভ দানা বাঁধে। তারা চায় না এখানে হাসপাতাল হোক। নগরীর ফুসফুস নামে খ্যাত স্থানটি সবার কাছে পরিচিত ও সমাদৃত। প্রাচ্যের রানী চট্টগ্রামের এ স্থানটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলানিকেতন। এখানে রয়েছে শিরীষতলা নামে একটি বিশাল মাঠ, যেখানে প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ, অমর একুশে, নবান্ন উৎসব ও পহেলা ফাল্গুনসহ নানা ঐতিহ্যগত উৎসব পালিত হয়ে থাকে। প্রতিদিন নানা শ্রেণির মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় স্থানটি। কোলাহলময় নগরে নিঃশ্বাস নেওয়ার জো নেই। মানুষ চায় একটুখানি প্রকৃতির ছোঁয়া। চায় দম ফেলার ফুসরত। তাই হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধিতা করছে সঙ্গতকারণেই চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ। শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে নানা কর্মসূচি পালন করছেন আজ বেশ কিছুদিন ধরে।
চট্টগ্রাম মহানগরীতে বা এর বাইরে অনেক জায়গা খালি পড়ে আছে। সিআরবি বেছে নেয়া ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ বলে সবাই মনে করছেন। এর পেছনে কোনো অশুভ উদ্দেশ্য আছে কি না খতিয়ে দেখা উচিত। নগরবাসী মনেপ্রাণে চায় হাসপাতাল হোক, তাদের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্যসেবা পাক। তবে এটা নির্মাণ করা হোক নগরির বাইরে বা অন্য কোথাও। এখানে ইউনাইটেড গ্রুপই হোক বা অন্য কোনো গ্রুপই হোক-প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশ বিরোধী যেকোনো অপতৎপরতার বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এ নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি চালিয়ে আন্দোলন বানচাল করা যাবে না। এ আন্দোলনে পুরো দেশের জনগণ আমাদের পাশে আছেন। ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। সিআরবি’র এক ইঞ্চি মাটি ছেড়ে দেব না। এ ব্যাপারে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ।
লেখক :মিনহাজুল ইসলাম মাসুম লেখক ও গবেষক
আপনার মন্তব্য লিখুন