সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:৩৭ অপরাহ্ন
ইরফান নাবিল :
করোনার ভ্যাকসিন এসে গেছে, তাই যেন গা ছাড়া ভাব। সচেতনতার বালাই নেই, মাস্ক ছাড়াই চলছে ঘোরাঘুরি, জম্পেশ আড্ডা। নগরের ডিসি হিল, সিআরবি, পতেঙ্গা, জাম্বুরি পার্কসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নানা বয়সী মানুষ এভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একজনের গা ঘেঁষে বসছে আরেকজন।
এমন দৃশ্য দেখে কে বলবে-করোনা ভাইরাস কেড়ে নিয়েছে অনেকগুলো প্রিয়মুখ, হাসপাতালে যুদ্ধ করতে হয়েছে মৃত্যুর সঙ্গে। অক্সিজেনের অভাবে ছটফট করতে হয়েছে প্রতিটা মুহূর্তে।
শীতের শুরুতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সরকার ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। কিন্তু অনেকেই তা মানছেন না। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত শুরুতে তৎপর থাকলেও এখন ঝিমিয়ে গেছে।
দেখা গেছে, বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে এবং রাস্তায় বেশিরভাগ মানুষ মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজনবোধ করছেন না। অনেকে থুতনির নিচে মাস্ক রেখে ঘোরাফেরা করছেন এবং ছবি তুলছেন। আবার অনেকে সঙ্গে মাস্ক রাখলেও মুখে না লাগিয়ে ব্যাগে কিংবা শার্ট, প্যান্টের পকেটে রেখে ঘুরছেন।
গণপরিবহন, বিপণি বিতান ও বাজারগুলোতে মানা হচ্ছে না কোনো ধরনের নিয়ম-কানুন। শুরুতে ব্যবসায়ীরা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করলেও এখন এ ব্যাপারে নেই কোনো পদক্ষেপ।
অনেক দোকান-রেস্টুরেন্টে মালিক ও কর্মচারীদের মুখে নেই মাস্ক, হাতে নেই গ্লাভস। চালক ও হেলপারও মাস্ক ব্যবহারে অনীহা প্রকাশ করছেন। শুধুমাত্র ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশ দেখলে তারা মাস্ক পরেন। মাস্ক না পরার পেছনে নানা অজুহাত দাঁড় করাচ্ছেন পথচারীরা, আবার না পরার কারণ জিজ্ঞেস করলে ক্ষেপে উঠছেন কেউ কেউ।
মুখে মাস্ক ছাড়া সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে সরকার। কোভিড-১৯ সংক্রমণ মোকাবিলায় মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করা, চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য সকল ক্ষেত্রে পুনবর্যবহারযোগ্য কাপড়ের মাস্ক পরিধান করা, মাস্ক পরিধান বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতর, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সামনে দৃশ্যমান স্থানে ‘মাস্ক ব্যবহার ব্যতীত প্রবেশ নিষেধ’ বা ‘নো মাস্ক নো এন্ট্রি’ অথবা ‘মাস্ক পরিধান করুন, সেবা নিন বা ওয়্যার মাস্ক গেট সার্ভিস’ বিষয়ে ব্যানার স্থাপন করতে জারিকৃত আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয় সরকারি নির্দেশনায়।
এছাড়া মাস্ক ছাড়া অফিস, আদালত, শপিং মল, বাজার, সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে না যাওয়া এবং কোনও সাহায্য, সহযোগিতা বা সার্ভিস না পাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে বলেও নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়।
এর প্রেক্ষিতে তৎপর হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। মাস্ক পরার জন্য সচেতনতা সৃষ্টিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষে প্রচার প্রচারণাসহ মাইকিং, লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ করা হয়। এরপরও অবহেলা করে যারা মাস্ক পরছেন না, তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আটকসহ জরিমানা করা হয়।
ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, মানুষ প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ২৩ বার হাত দিয়ে মুখ স্পর্শ করে। হাত থেকে মুখে সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক ব্যবহার করে সুফল পাওয়া যায়। হাঁচি বা কাশি থেকে ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কিছুটা কমাতে সাহায্য করতে পারে এই মাস্ক। আর হাত থেকে মুখের সংক্রমণের বিরুদ্ধেও মাস্ক সুরক্ষা দেয়।
আপনার মন্তব্য লিখুন