মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:৩৪ অপরাহ্ন
এস এম ইরফান নাবিল:
মহাকালের আবর্তে বিলীন গেল ২০২১ সাল। এ বছরের সকল দুঃখ-বেদনা ভুলে গতকাল মধ্যরাতে বিশ্বের সাথে বাংলাদেশও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নতুন আশা নিয়ে বরণ করছে ২০২২ সালকে।
করোনাভাইরাস মহামারির ছায়াতেই বিশ্বজুড়ে এবারও কোটি কোটি মানুষ নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে। দুইবছর আগে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে বিশ্বজুড়ে ২৮ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষের দেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫৪ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বিশ্বজুড়ে আবার গত অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। ওমিক্রন নামে করোনার আরেকটি ধরণ ইতোমধ্যেই উদ্বেগ বাড়িয়ে চলছে। করোনা ডেলটা এবং ওমিক্রনের সংক্রমনের কারণে অনেক দেশ নববষের্র উৎসব বাতিল করছে।
‘খ্রিষ্টীয় নববর্ষ-২০২২’ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলা নববর্ষ আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকলেও ব্যবহারিক জীবনে খ্রিষ্টীয় বর্ষপঞ্জিকা বহুল ব্যবহৃত। খ্রিষ্টাব্দ তাই জাতীয় জীবনে প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় অবিচ্ছেদ্যভাবে মিশে আছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর নববর্ষকে বরণ করতে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী বর্ণাঢ্য নানা আয়োজন করা হলেও করোনা মহামারির কারণে বিগত বছরের মতো এবারের উৎসবের আমেজও অনেকটাই ম্লান।’
রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে তবে বিশ্বব্যাপী করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে সতর্কতা প্রতিপালনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে একজনের আনন্দ যেন অন্যদের বিষাদের কারণ না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নববর্ষ উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০২০ এবং ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ বাঙালি জাতির জীবনে ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠান-২০২১ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের সঙ্গে একযোগে পালনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে ২০২১ সালের মার্চ মাসে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০-দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করি, যেখানে সার্কভুক্ত ৫টি দেশের রাষ্ট্র প্রধান বা সরকার প্রধানগণ সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানমালায় যোগ দিয়েছিলেন। তাছাড়া বিশ্বের ৭৭টি দেশের রাষ্ট্র প্রধান বা সরকার প্রধানগণ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানগণ ভিডিও বার্তা ও অভিনন্দনপত্র প্রেরণ করেছেন, যেখানে সকলেই আমাদের সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কর্মকান্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আমাদের সরকারের উদ্যোগে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের রাজধানী এবং গুরুত্বপূর্ণ শহরে জাতির পিতার নামে স্মারক ভাস্কর্য স্থাপন, সড়ক ও পাকের্র নামকরণ করা হয়েছে। ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে সৃজনশীল অর্থনীতিতে আন্তজার্তিক পুরস্কার প্রবর্তন করেছে।’
নববর্ষ মানেই সকলের মাঝে জাগায় প্রাণের নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পেছনে ফেলে নতুন বছরে অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাওয়া। স্বভাবতই নতুন বছর নিয়ে এবারও মানুষের প্রত্যাশা একটি করোনা মুক্ত বিশ্ব। তবে, করোনার টিকা ছাড়াও অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনাসহ মানবসম্পদ তৈরির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হচ্ছে গতবছরের মত আগামী বছরের মোটা দাগের চ্যালেঞ্জ। আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশ আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে, এটিই নতুন ইংরেজি বছরে সবার প্রত্যাশা। নতুন বছরকে স্বাগত জানাচ্ছে “দৈনিক সমর” । বাংলাদেশের সকল নাগরিককে ও বিশ্ববাসীকে “দৈনিক সমর” এর পক্ষ থেকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইল । স্বাগত ২০২২ সাল ।
আপনার মন্তব্য লিখুন