মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ০২:০০ অপরাহ্ন

নোটিশ :
✆ন্যাশনাল কল সেন্টার:৩৩৩| স্বাস্থ্য বাতায়ন:১৬২৬৩|আইইডিসিআর:১০৬৬৫|বিশেষজ্ঞ হেলথ লাইন:০৯৬১১৬৭৭৭৭৭
সংবাদ শিরোনাম
আউটার স্টেডিয়ামকে নতুন রূপে সাজানোর কাজ শুরু বাংলাদেশে নির্বাচন ও গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হলে দায়ীদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বন্ধ : ব্লিঙ্কেন নির্বাচন ছাড়াই বর্তমান সংসদের মেয়াদ আরও ৫ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব ঢাবি শিক্ষকের চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচন: বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হলেন নোমান স্বপ্নের কালুরঘাট সেতুর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো : নোমান আল মাহমুদ বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সস্তান: ড.মোঃ বদিউল আলম চট্টগ্রামে ৭ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ, বেড়েছে লোডশেডিং : বেড়েছে মানুষের কষ্ট বোয়ালখালীতে বাস ও সিএনজি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৫ কালুরঘাট সেতুটি আরেক দফা সংস্কার যাচ্ছে: খরচ হবে ৫৫ কোটি টাকা থেমে গেলো আরেকটি বিবেকি কণ্ঠ

মাটির নিচে গ্যাস খুঁজবে বাপেক্স, সীতাকুন্ডে ৫টি গভীর স্তরে কূপ খনন

ফেইসবুকে নিউজটি শেয়ার করুন...

দিনারুল আলম সম্রাট:
গ্যাসের খোঁজে মাটির গভীরে চষে বেড়াতে চায় বাংলাদেশ। এখন এ নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স)। এজন্য দেশের আরও কয়েকটি স্পটের পাশাপাশি গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানানো হচ্ছে চট্টগ্রামের অন্তত তিনটি জায়গা ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি স্পটে।
বাপেক্সের ত্রিমাত্রিক জরিপে দেখা গেছে, ভূপৃষ্ঠের পাঁচ কিলোমিটার গভীরে আরও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশে এখন গ্যাসের খনিগুলো মাটির চার থেকে সাড়ে চার হাজার মিটার নিচে।
ত্রিমাত্রিক জরিপে দেখা গেছে, দেশের গ্যাসখনিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় তিতাসের পাঁচ হাজার মিটারের নিচে খনন করলে কমপক্ষে ১.৬ টিসিএফ গ্যাস পাওয়া যেতে পারে। সম্ভাব্য অন্য স্পটের মধ্যে রয়েছে সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনায় অবস্থিত ‘সুনেত্র’ এলাকা। এগুলো ছাড়াও চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড, বাঁশখালী ও পটিয়া এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের কাসালংয়ে গ্যাসের অবকাঠামো রয়েছে। এছাড়া গ্যাস পাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে মোবারকপুর, শ্রীকাইল, ফেঞ্চুগঞ্জ, পাথারিয়া, আটগ্রামে। এই জায়গাগুলোতেও অনুসন্ধান শুরুর কথা ভাবছে বাপেক্স।
এ পর্যন্ত দেশের মোট ২৫টি এলাকায় গভীর অঞ্চলে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য গভীর স্তরে কূপ খনন করা হয়। এই ২৫টির মধ্যে ১৬টি ক্ষেত্র স্থলভাগে। এর মধ্যে রয়েছে সীতাকুন্ড-৫, সেমুতাং ১, জলদি-৩, হালদা-১, লালমাই-২, কৈলাশটিলা-১, মুলাদি-১, মুলাদি-২, বিয়ানিবাজার, সিংড়া-১, আটগ্রাম-১, ফেঞ্চুগঞ্জ-২, বিবিয়ানা-১, কাজল-১, সুনেত্র ও মোবারকপুর। এর মধ্যে সেমুতাং-১, কৈলাশটিলা-১, বিয়ানিবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ-২ এবং বিবিয়ানা-১ এ গ্যাস পাওয়া গেছে।
বৃহত্তর চট্টগ্রামে সেই ছয় দশক আগে থেকেই অন্তত চারটি ক্ষেত্র চিহ্নিত। এগুলো হচ্ছে বাঁশখালীর জলদি, পটিয়ার বুদবুদিছড়া আর পার্বত্য চট্টগ্রামের সীতাপাহাড় ও কাসালং।
পঞ্চাশের দশকের গোড়ার দিকে চট্টগ্রামের পটিয়াতে একটি বিদেশি কোম্পানি গ্যাসকূপ খনন করার কাজ শুরু করে। কিন্তু তখন ওই এলাকা দুর্গম এবং নিরাপত্তাহীন হওয়ার পাশাপাশি গ্যাসের বাজার তৈরি না হওয়ায় কাজ বন্ধ করে দেয় তারা।
১৯৫০ সালে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও গ্রামের পাহাড়ী এলাকার শ্রীমাই বুদবুদিছড়া নামক স্থানে প্রথমে এই গ্যাসক্ষেত্রটি আবিষ্কৃত হয়। ওই বছর থেকেই পর্যায়ক্রমে কয়েক দফা প্রাথমিক জরিপ ও খনন কাজ চালানো হয়। ১৯৫৫ সালের আগস্ট মাসে হাইদগাঁও বুদবুদি ছড়া এলাকায় আবার গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। বার্মা অয়েল কোম্পানি সেই গ্যাস উত্তোলনের জন্য কূপ খনন করে। পরবর্তীতে নানা কারণে গ্যাস উত্তোলনের কাজ আর এগোয়নি। এখনও বুদবুদিছড়া এলাকা ছাড়াও পাহাড়ি ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নির্গত হয় প্রাকৃতিক গ্যাস।
পরবর্তীতে ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে বাঁশখালীর জলদি এবং আশির দশকে সীতাপাহাড়ে অনুসন্ধান চালানো হয়। এছাড়াও কাসালংয়ে তৈরি করা হয় খননের অবকাঠামো।
পার্বত্য চট্টগ্রামের একমাত্র গ্যাসক্ষেত্র পার্বত্য খাগড়াছড়ির মানিকছড়ির সেমুতাং গ্যাস ফিল্ডের ৬নং কূপে পানির চাপ বেড়ে যাওয়ার ফলে হালদার পানি দূষণের আশঙ্কা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা পাওয়ার কারণে বাপেক্স ২০১৪ সালের ৩ ডিসেম্বর থেকে ৬নং কূপটি বন্ধ করে দেয়। পার্বত্য খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী উপজেলা ঐতিহ্যবাহী মংরাজার আবাসস্থল মানিকছড়ি উপজেলার কালাপানি মৌজার ২১ একর ভূমির উপর ১৯৬৩ সালে ব্রিটিশ একটি অনুসন্ধানী দল এই গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করে। এ গ্যাস ফিল্ডের ৫ নং কূপ থেকে ২০১১ সালের ডিসেম্বরে প্রথম গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়। পরে বাপেক্স পুরাতন ১নং কূপের পাশে পাহাড়বেষ্টিত এলাকায় ৬নং কূপ খননের উদ্যোগ নেয়। প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে কূপটি খননের কাজ পায় রাশিয়ান কোম্পানি গেজপ্রম।
২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত নানা সমস্যা কাটিয়ে এ গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়। শুর“তে এ কূপ থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪.৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ হলেও ৭ মাসের মধ্যে তা ২.২ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে আসে। প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৩ হাজার ব্যারেল পানি ওঠায় তা নিয়ে একপর্যায়ে বিপাকে পড়তে হয়। ফলে অপরিশোধিত পানিতে শোধনাগার উপচে আশেপাশের জমি এবং হালদায় পড়তে থাকে। ফলে হালদার পরিবেশ দূষিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। ফলে কর্তৃপক্ষ ২০১৪ সালের ৩ ডিসেম্বর কূপটি বন্ধ করে দেয়।

ফেইসবুকে নিউজটি শেয়ার করুন...

আপনার মন্তব্য লিখুন


Archive

© All rights reserved © 2021 Dainiksomor.net
Design & Developed BY N Host BD