বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৫১ পূর্বাহ্ন
এস এম ইরফান নাবিল :
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের মাঠে নামছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী দিনে জনসভায় যোগ দিলেও নির্বাচনী আবহ নিয়ে আজই প্রথম সরাসরি উপস্থিত থেকে জনসভা করার উদ্যোগে মাঠে নেমেছেন শেখ হাসিনা। আজ যশোর শহরের শামসুল হুদা স্টেডিয়ামে বিকাল আড়াইটায় জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় দলের সভাপতি হিসেবে ভাষণ দেবেন তিনি। এরপর ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পোলোগ্রাউন্ডে ও ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারের শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দলীয় জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন। জানা গেছে, এরপর নতুন বছরে বিভিন্ন বিভাগে ও জেলা পর্যায়ে জনসভা করার উদ্যোগ আছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই জনসভার মধ্য দিয়ে তিনি নির্বাচনী আমেজ তৈরি করবেন, সেই সঙ্গে বিএনপির জনসভা ও তাদের নেতৃবৃন্দের বক্তব্যেরও কড়া জবাব দেওয়া হবে। এ ছাড়া জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বিগত তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় আওয়ামী লীগ সরকার দেশের যেসব উন্নয়ন করেছে তা জনগণের সামনে তুলে ধরবেন। পাশাপাশি দলের জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উজ্জীবিতও করা হবে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান বলেন, ‘করোনার কারণে বঙ্গবন্ধুকন্যা জনগণের কাছাকাছি দীর্ঘদিন যেতে পারেননি। করোনার প্রকোপ কমে আসায় তিনি এখন বিভিন্ন জায়গায় জনসভা শুরু করবেন। ইতোমধ্যে তিনটি জেলায় জনসভার তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। এসব জনসভায় সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরার পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত আমলে দেশের পরিস্থিতি কী ছিল তাও জনগণকে মনে করিয়ে দেবেন।’
জানতে চাইলে যশোর ও বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘এই জনসভার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা দেখা যাবে। জনসভার জনস্রোতই বলে দেবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অনিবার্যতার এবং বিএনপি-জামায়াতের প্রতি মানুষের অনাগ্রহতার কথা।’
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘নেত্রী যেখানে যাবেন সেখানে জনসমাবেশ নয়, জনমহাসমুদ্রে রূপান্তরিত হবে। কারণ শেখ হাসিনা রাজনীতি করেন দেশের মানুষের জন্য। তিনি মানুষের কথা ভাবেন। আর বিএনপি নেত্রী ভাবেন দলের কথা, সন্ত্রাসের কথা, জঙ্গিবাদের বাংলাদেশের কথা। এই হলো পার্থক্য। এজন্য জনগণ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বক্তব্য শোনার জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতির সামনে জানাবেন তিনি বিগত দিনে কী করেছেন, আগামী দিনে জনগণের জন্য কী করবেন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন অগ্রজ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত নানাবিধ কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকবেন দলের নেতৃবৃন্দ। প্রতিটা কর্মসূচিতেই বড় জনসমাবেশ সৃষ্টির টার্গেট থাকবে। এসবের মধ্য দিয়ে রাজনীতির মাঠ দখলে নেওয়ার চেষ্টা থাকবে।
যশোরের সমাবেশের পর ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পোলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভা। ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে জনসভা। ইতোমধ্যে সমাবেশের সব পরিকল্পনা করা হয়েছে। এখন প্রতিনিয়ত সাজসজ্জা ও নান্দনিকতার দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন সাংবাদিকদের বলেন, ‘জনসভা দুটি সফল করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। নেতাকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। এ জনসভা দুটির চরিত্র হবে নির্বাচনী জনসভা। আমরা আশা করছি বীর চট্টলা ও সমুদ্রকন্যা কক্সবাজার অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে জনসভার নতুন রেকর্ড গড়বে।’
এ ছাড়া ২৫ নভেম্বর স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ- স্বাচিপের সম্মেলন। ২৬ নভেম্বর মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। ২ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের সম্মেলন, ৮-৯ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন। ১৫ ডিসেম্বর যুব মহিলা লীগের সম্মেলন হবে। ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন। এর আগে-পরে দলের সহযোগী সংগঠনের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। এসব সম্মেলনেও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে ভাষণ দেবেন।
আপনার মন্তব্য লিখুন