মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ০২:১৩ অপরাহ্ন
এস এম ইরফান নাবিল :
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় চরণদ্বীপ ইউনিয়ন এলাকায় একটি মাদ্রাসার ভেতর থেকে কম্বলে মোড়ানো এক শিশুছাত্রের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে লাশটি উদ্ধার করা হয়। ওই ছাত্রকে খুন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় মাদ্রাসার তিন শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। উপজেলার পশ্চিম চরণদ্বীপ ইউনিয়নের অছিউর রহমান ফারুকী (রা.) এতিমখানা হেফজখানায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম ইফতেখার মালিকুল মাশফি (৭)। সে চরণদ্বীপ ইউনিয়নের ফকিরাখালী গ্রামের প্রবাসী আবদুল মালেকের সন্তান। ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের নাজেরার শিক্ষার্থী ছিলেন মাশফি। আটক তিন শিক্ষক হলো- মো. রুস্তম আলী, মো. শাহাদাৎ আলী ও জাফর আহম্মেদ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে মাদ্রাসার এক শিক্ষক মাশফিদের বাড়িতে গিয়ে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান। এ খবর দিয়েই তিনি দ্রুত ওই বাড়ি ত্যাগ করেন। পরে তাকে আর পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। লাশ পেয়ে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এর পর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাদ্রাসার ভেতরে একটি ভবনের দোতলায় একটি কক্ষ থেকে তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে। লাশটি কম্বলে মোড়ানো ছিল। তাকে কক্ষের ভেতরেই চাকু দিয়ে গলা কেটে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পটিয়া সার্কেল) তারিক রহমান দৈনিক সমরকে জানান, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী খুন হয়েছে এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত। এ ঘটনায় তিন শিক্ষককে জিজ্ঞাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায়ও তারা পুলিশ হেফাজতে ছিল। মামলা প্রক্রিয়াধীন।‘আমরা এখনও মেডিকেলে আছি। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে আমরা বিস্তারিত জানাতে পারবো।’
এদিকে হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে এলাকার কয়েকশ লোক মাদ্রাসার সামনে জড়ো হন। তারা হত্যাকান্ডের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে যান চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এসএম রাশিদুল হক। তিনি শিশুটির হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেন।
শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বছর মাশফিককে কোরআন শিক্ষার জন্য ওই মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়। কয়েকদিন আগে ছুটিতে বাড়িতে আসে। গত শুক্রবার বিকালে ছুটি শেষে তাকে মাদ্রাসায় পাঠানো হয়। শনিবার সকালে মাদ্রসার পক্ষ থেকে মাশফিককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানানো হয়। পরে পরিবারের লোকজন মাদ্রাসায় গিয়ে খুঁজতে থাকে। মাদ্রাসার দ্বিতীয় তলার স্টোর রুমে কম্বলে মোড়ানো গলা কাটা লাশ দেখতে পান স্বজনরা। এর পর তারা থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
আপনার মন্তব্য লিখুন