সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩, ১১:৩৯ অপরাহ্ন
এস এম ইরফান নাবিল :
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনের আয়োজনের কর্মযজ্ঞ চলছে। সম্মেলন সফল করতে ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে বেশ কয়েকটি প্রস্তুতি উপ-কমিটি। দাওয়াত দেওয়া, প্রচার-প্রকাশনা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এসবতো কেবল আনুষ্ঠানিকতা। ছাত্রলীগে দক্ষ, অভিজ্ঞ ও যোগ্য নেতৃত্ব খুঁজছে দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতারা।
ছাত্রলীগের এবারের প্রার্থীদের মধ্যে থেকে দক্ষ, যোগ্য, পরিচ্ছন্ন ও অভিজ্ঞ প্রার্থী দেখে প্রধানমন্ত্রী সংগঠনটির কমিটি ঘোষণা দেবেন বলে জানা গেছে। সূত্র বলছে, ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে প্রতিবার যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়, সে বিতর্কের ইতি টানতে চান প্রধানমন্ত্রী। তাছাড়া এবারের সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে দ্বিতীয়বারের মতো ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী প্রজন্মের জন্য যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে বর্তমান সরকারের। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও দেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগপন্থী তরুণ প্রজন্ম গড়ে তুলতে ছাত্রলীগকে সবচেয়ে বেশি কাজ করতে হবে। যে কারণে এবারের ছাত্রলীগে জনপ্রিয় ও বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকা নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের পরিকল্পনা, নির্বাচনকেন্দ্রিক বিএনপির নানা বিষয় বিশেষণ সামনে রেখে এ কমিটি গঠন করা হবে।
এবার যোগ্য ও অভিজ্ঞ প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে করোনায় অক্সিজেন সরবরাহ করে আলোচনায় আসা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামবিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, দেশরত্ম মেডিসিন সার্ভিস সেবার উদ্যোক্তা ও ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সজীব, ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাহসান আহমেদ রাসেল ও বিনামূল্য খাবার সরবরাহ করে আলোচনায় আসা ডাকসুর সাবেক সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-সমাজসেবা সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত এবং কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক আনফাল সরকার পমনের নাম আলোচনায় রয়েছে।
উত্তরবঙ্গ থেকে উপ-পরিবেশ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ সোহাগ, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, উপ-দপ্তর সম্পাদক আহসান হাবীব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সবুজ। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনকেও দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
ময়মনসিংহ থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক মেহেদি হাসান তাপস ও বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সভাপতি সজিবুর রহমান সজীব আলোচনায় রয়েছেন।
বরিশাল থেকে সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, উপ-বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক সবুর খান কলিন্স, উপ-কর্মসংস্থানবিষয়ক সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয় ও সহ-সভাপতি তিলোত্তমা শিকদার আলোচনায় রয়েছেন।
ফরিদপুর থেকে আলোচনায় রয়েছেন উপ-ক্রীড়া সম্পাদক শরীফ বায়েজিদ ইবনে মোহাম্মদ কোতওয়াল, সহ-সভাপতি শেখ সাগর আজমেদ ও হাজী মহাম্মদ মহসীন হলের সভাপতি শহীদুল হক শিশির।
এছারা খুলনা থেকে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন ও উপ-বিজ্ঞান সম্পাদক খন্দকার হাবিব আহসান এবং সিলেট থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক আল আমিন রহমান আলোচনায় আছেন।
সম্মেলনের প্রস্তুতির বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সবচেয়ে আনন্দের অধ্যায় জাতীয় সম্মেলন। সম্মেলন উপলক্ষে ছাত্রলীগের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আমরা বিভিন্ন কর্মযজ্ঞ নিয়ে ইতোমধ্যে উপ-কমিটি গঠন করে দিয়েছি। উপ-কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা পোস্টার-ফেস্টুন তৈরি, প্রকাশনার কাজ, মঞ্চ সাজসজ্জাসহ অতিথিদের দাওয়াত দেওয়ার যাবতীয় কাজ শেষ করছে। আশা করি আমরা সুন্দর একটা সম্মেলন উপহার দিতে পারবো।’
সম্মেলন ও নেতৃত্বের বিষয়ে ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এবার ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে ছাত্রদের কাছে যাদের জনপ্রিয়তা আছে, গ্রহণযোগ্যতা বেশি, ছাত্রদের সঙ্গে ওতপ্রোত সম্পর্ক আছে, তাদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। ছাত্রদের থেকেও এবার প্রস্তাব নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী দেখছেন, খোঁজ-খবর রাখছেন, আমাদের ওপরও দায়িত্ব আছে। আমরাও খোঁজ-খবর নিচ্ছি। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে আমরা সুপারিশ করবো।’
আপনার মন্তব্য লিখুন