দেশের রাজস্বের প্রায় ৪০ শতাংশের যোগানদাতা ও বৈদেশিক বাণিজ্যের ৯২ শতাংশের প্লাটফর্ম হিসেবে খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দর। দেশের বাণিজ্যিক কন্টেইনারের ৯৮% হ্যান্ডলিং হয় এই বন্দরে। ১৯৩০ সালের দিকে শুরু হয় প্রথম হাইড্রোলিক সমিক্ষা। তারপর থেকেই ৫ টি ট্রেনিং ওয়ালের মাধ্যমে প্রধান বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু আজ ১০ মিটার ড্রাফট এবং ২০০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ বার্থিং এর মাধ্যমে দেশে নৌ-বাণিজ্যর এক নতুন সুচনা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের কাজ ৯৫ ভাগ শেষ। অতি দ্রুত এটি চালু হবে। ২০২৪ সালে আমাদের বে-টার্মিনাল চালুর লক্ষ্য ছিল। কিন্তু করোনাকালীন সময়ের জন্য আমরা পিছিয়ে গেছি। তবে আমরা এগিয়ে যাব। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণেও আমরা কিছুটা পিছিয়ে পড়েছি। সাড়ে ৩ হাজার মিটারের বে-টার্মিনালের কাজ সকলের পরামর্শ নিয়ে করা হচ্ছে। ডিপিপি কার্যক্রম শেষ হলেই বে-টার্মিনালের কাজ শুরু হবে। শতভাগ প্রস্তুত করে আশা করছি ২০২৬ সালের মাঝামাঝি অপারেশনে যাবে। পাশাপাশি ২০২৬ সালের শেষে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরও চালু হবে।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বন্দরের সিসিটি-১ জেটিতে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার গভীরতাসম্পন্ন জাহাজের কাজ শুরুর কথাও জানান তিনি। খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে সর্বপ্রথম ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ বার্থিং এর উদ্বোধন হওয়াতে আজকে চট্টগ্রাম বন্দরের ইতহাসে বড় জাহাজ ভেড়ানোর সময় আমরা উপস্থিত আছি। এটা আমাদের সবার জন্য গর্বের। আমরা এত বড় জাহাজের বার্থ নিশ্চিত করতে পেরেছি।
আমাদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক অন্যরকম। বঙ্গবন্ধু যখন জেল মুক্তি পান, তখন তাকে কিছু অপশন দেয়া হয়েছিল। তিনি যুক্তরাজ্যকে বেছে নিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম বন্দরে যে কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠানটি গবেষণা করেছেন তারাও যুক্তরাজ্যের। চট্টগ্রাম বন্দর অচল মানেই গোটা দেশ অচল। মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পদ্মাসেতুতেও চট্টগ্রাম বন্দরের অবদান আছে।
তিনি আরও বলেন; পদ্মাসেতু থেকে সরে গিয়ে বিশ্বব্যাংক এখন অনুতপ্ত। বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগুচ্ছে। অর্থনৈতিক দেশের উন্নয়নে আজ অন্যরা অনুপ্রাণিত। তৃতীয় বিশ্বের আলোচনায় বাংলাদেশ এখন প্রথম। আগামীতে চট্টগ্রাম বন্দর আরো ইতিহাস গড়বে। পৃথিবীর সকল বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশেই আসবে। দেশ নিজের সাহস ও শক্তি দিয়ে এগিয়ে যাবে। বন্দরের অংশীজনদের বলব আপনাদের জন্য আমাদের দরজা সব সময় খোলা।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মোস্তফা কামাল, ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার এইচ ই রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, শিপিং এজেন্ট এসোশিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ হোসেন, বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
আপনার মন্তব্য লিখুন