মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৫:৩৫ অপরাহ্ন
ঢাকা প্রতিনিধি :
বিএনপির কর্মসূচিতে সরকারের আপত্তি নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আন্দোলন করেন, মিছিল করেন, মিটিং করেন, কোনো আপত্তি নেই। তবে, একজন মানুষের ওপরও আক্রমণ হলে একটাকেও ছাড়বো না। আমাদের ওপর হামলা হয়েছে সহ্য করেছি। মানুষের ওপর হামলা হলে সহ্য করবো না।’
শনিবার (২৬ নভেম্বর) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের ষষ্ঠ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সম্মেলনে মায়েদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ছেলে-মেয়ে যাতে নিজের মনের কথা মায়ের কাছে বলতে পারে, সে পরিবেশ করতে হবে। তাহলে তারা বিপদগামী হবে না। এ ক্ষেত্রে মায়ের বিরাট ভূমিকা আছে, সেটা যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি। এতে মেয়েরা চিকিৎসা পায়। মেয়েরাই চাকরি করে। সারাদেশে ৩০ হাজার নার্স ও ৪৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছি। দুগ্ধপানকারী মায়ের বিনাপয়সায় চিকিৎসা করে দিয়েছি। নারীদের সবধরনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। প্রাথমিক শিক্ষায় ৬০ শতাংশ মেয়ের চাকরির ব্যবস্থা করেছি।
নারীদের ওপর বিএনপির অত্যাচারের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির আমলে ৬ বছরের শিশু থেকে ৬০ বছরের বৃদ্ধাও রেহাই পায়নি। ঠিক একইভাবে ৭১ এ নারীদের ওপর পাশবিক অত্যাচার হয়েছিল।
ইসলাম ধর্মই একমাত্র নারীদের সমান অধিকার দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম ধর্মই একমাত্র ধর্ম, যেখানে নারীদের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। সম্পদে স্বামী ও বাবার সম্পদে নারীর অধিকার দিয়েছে ইসলাম। অথচ ধমের্র নামে নারীদের ঘরে রেখে দিতে চায়, তারা জানে না।
তিনি বলেন, যেকোনো অর্জনে নারীদের অবদান থাকতে হবে। সমাজের অর্ধেক নারী। তারা অচল থাকলে সমাজ এগোবে না। নারী-পুরুষকে সমান তালে এগিয়ে যেতে হবে। আমি নারীদের বিচারপতি, সচিব, ডিসি, এসপি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পথ সুগম করেছি। আজকে আমাদের মেয়েরা প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে মেয়েরা ভালো করে বিশ্বের প্রশংসা কুড়াচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর করে দিচ্ছি। সেখানে নারী ও পুরুষকে সমান ভাগ দিচ্ছি। কেউ স্ত্রীকে ছেড়ে দিলে ওই বাড়ি হবে নারীর, পুরুষের নয়। যাতে নতুন ঘর পেয়ে কেউ নতুন বউ না নিয়ে আসে।
মেয়েদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মেয়েরা স্বামীদের কাছে কত কিছু দাবি করে। আমার মাকে দেখিনি কোনো কিছু দাবি করতে। বরং তিনি বলতেন, তুমি তোমার কাজ করে যাও। সংসারসহ সব কিছু আমি দেখবো। বাবাকে যখন হত্যা করে, তখনও বলেছিলেন তাকে যেহেতু হত্যা করেছো, আমাকেও হত্যা করো।
মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগমের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চুমকি সম্পাদক শিলা :
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মেহের আফরোজ চুমকি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শবনম জাহান শিলা।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনে নতুন নেতাদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সংগঠনটির জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হন হাজারো নেতাকর্মী। ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম অধিবেশন শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলটির সহযোগী সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগের নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন।
এছাড়া মহিলা আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সাহেদা খানম দিপ্তী, সাধারণ সম্পাদক হাসিনা রাবী চৌধুরী। আর দক্ষিণের সভাপতি সাবেরা বেগম স্বপদে বহাল রয়েছেন, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন পারুল আক্তার।
এ সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য হিসেবে সিমিন হোসেন রিমি ও মহিলাবিয়ষক সম্পাদক হিসেবে জাহানারা বেগমের নাম ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের।
এর আগে ২০১৭ সালের ৪ মার্চ মহিলা আওয়ামী লীগের পঞ্চম সম্মেলন হয়েছিল। এতে সাফিয়া খাতুন সভাপতি এবং মাহমুদা বেগম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিন বছর মেয়াদি কমিটি হলেও পাঁচ বছর পর নতুন নেতৃত্ব পেলো মহিলা আওয়ামী লীগ।
আপনার মন্তব্য লিখুন