সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩, ১০:১০ অপরাহ্ন
মোহাম্মদ এয়াকুব : কর্ণফুলী উপজেলার অধিকাংশ সড়কের বেহাল দশা, ফলে মানুষের যাতায়াত বিঘ্নিত হচ্ছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি এলেই জন জীবন হয়ে পড়ে বিপর্যস্ত। অধিকাংশ সড়ক গুলোর সংষ্কার করার এক বছর অতিবাহিত হতে না হতেই পুরনো চেহারায় ফিরে যায়। আবার কিছু সড়কের কাজ শেষ হতে না হতেই বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়ে। সড়কগুলোর অধিকাংশ স্থানই খনাখন্দ সৃষ্টি হয়। যে কারণে প্রতিনিয়ত দূর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সরেজমীনে দেখা যায়, বেহাল সড়কগুলোর মধ্যে কণফুলী উপজেলার প্রধান একটি সড়ক বক্তিয়ার সড়ক অন্যতম। শিকলবাহা চৌমুহনী হতে ফকিরনীরহাট পর্যন্ত আবার ফকিরনীরহাট থেকে শুর“ করে মাতবক্ষর ঘাট পর্যন্ত । এইদিকে ফকিরনীরহাট খাদ্য ফ্যাক্টরী মোড় থেকে জুলধা পাইপের গোড়া হয়ে ডাঙ্গারচর ইছিন্নাহাট পর্যন্ত প্রায় বিশ কিলোমিটার সড়কটিতে অগণিত গর্ত সৃষ্টি হয়ে গেছে। তবে মাঝে কিছু কিছু পীচ ঢালাই অংশ ভালো রয়েছে। অন্যদিকে সৈন্ন্যারটেক থেকে কর্ণফুলী বোড বাজার থানা পর্যন্ত এক হতে দুই কিলোমিটার সড়ক কার্পেটিং অংশটি চলাচলের সীমাহীন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। কর্ণফুলী থানার পাশ ঘেষে চরলক্ষ্যার উপর দিয়ে ডাঙ্গারচর পর্যন্ত প্রায় আট নয় কিলোমিটার সড়ক অস্তিত্ব সংকটে। একই অবস্থায় সৈন্ন্যারটেক আয়ুব বিবি সিটি কর্পোরেশন স্কুল এন্ড কলেজ সড়কটি অধিকাংশ কার্পেটিং উঠে গিয়ে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে ফলে হাজার হাজার সাধারণ নাগরিক স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে প্রতিনিয়ত অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে। জানা যায়, কর্ণফুলী থানার দক্ষিণ পাশে সড়কটি দিয়ে প্রতিনিয়ত পাঁচ গ্রামের মানুষ চলাচল করে। গত পাঁচ বছর ধরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। উক্ত সড়ক দিয়ে থানা, ভূমি সাব রেজিষ্টার অফিস, উপজেলা পরিষদ, হাসপাতাল ও স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা সহ বিশ্ব-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। যাতায়াত করে হাজার হাজার বাসিন্দা। ফলে এই সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পথচারী আলী আজম জানান, বোড বাজার থেকে নিমতল ডাঙ্গারচরসহ পশ্চিম চরলক্ষ্যা অংশে কোনো যানবাহন নিয়ে প্রবেশ করতে রাজী হন না চালকরা। থানা, স্কুল-কলেজ সংলগ্ন সড়ক হওয়ায় এই সড়কটি ব্যবহার করছে পার্শ্ববর্তী ডাঙ্গারচর আইল্যেরচর সহ পশ্চিম জুলধার বাসিন্দারা। জরুরী মুহূতের্ব মুমূর্ষু রোগী নিয়ে এসে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ, উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৯-২০ অর্থ-বছরের পানি উন্নয়ন বোডের বরাদ্দকৃত অর্থ সাত কোটি সাতাশিলক্ষ টাকা বরাদ্দ হলে বরাদ্দকৃত প্রকল্পের মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে হলেও রাস্তার কাজের ধীরগতির রাস্তাটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে বলেএলাকাবাসীরা জানান । এছাড়াও পিএবি সড়কের ফকিরনীরহাট রাস্তার মাথা থেকে জামতল হয়ে মাতবক্ষর ঘাট পর্যন্ত সড়কটি বছরের পর বছর ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে জনসাধারনের যাতায়াত অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বড় গর্ত, খনাখন্দে ভরপুর এই রাস্তাটি সামান্য বৃষ্টিতেই গর্তে পানি জমে জলাশয়ে পরিণত হয়ে যায়। এই অবস্থায় যাত্রী ও পন্য বাহী যানবাহন বেশ ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হয়। অপরদিকে এসকল সড়কের দূরাবস্থার কারণে গাড়ীর যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বেহাল দশার এই সড়কগুলো দ্রুত সংষ্কার করার প্রয়োজন বলে দাবী স্থানীয়দের। সিএনজি চালক তাহের বলেন, শিকলবাহা চৌমুহনী থেকে ফকিরনীরহাট থেকে জামতল বাজার পর্যন্ত এবং সৈন্ন্যারটেক সড়ক হতে বোড বাজার সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সড়কের ভাঙ্গা গর্তগুলোতেগাড়ীর চাকা পড়লে আর উঠানো যায় না। গর্তে পড়ে আমার গাড়ীর কিছু পার্টস সহ যন্ত্রাংশ ভেঙ্গে গিয়েছে। এতে করে চালকরা প্রতিনিয়ত আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর বলেন, শুনেছি উপজেলার বিশাল বিশাল বরাদ্দের টাকা দিয়ে বারবার করা হচ্ছে সড়ক সংষ্কারসহ পুনঃনিমার্ণের কাজ। বছর শেষেই সড়কের এমন বেহাল দশায় পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। এইদিকে উপজেলা ফকিরনীরহাট পিএবি সড়ক হতে জামতল বাজার হয়ে ডাঙ্গারচর ০৫নং ঘাট পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কটির ভারি যানবাহন ট্রাক, কাভাটভ্যান, পিকআপ চলাচলে কারণে রাস্তার মাঝখানে মাঝখানে পুকুর সৃষ্টি হয়ে গেছে অসংখ্য জায়গায়। স্থানীয়রা জানান, ভারী যানবাহনের উপযোগী বরাদ্দের বাজেট হলেও সড়ক নির্মাণের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের তদারকির অভাবে নিম্ন মানের উপাদান দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এবং কাজের ধীরগতি হচ্ছে। ফলে উপজেলা বাসিন্দাদের মধ্যে বিভিন্ন কানাকানি চলছে। সৃষ্টি হয়েছে গুজব। অন্যদিকে শিকলবাহা চৌমুহনী বক্তিয়ার সড়কে পারিবারিক স্বাস্থ্য ক্লিনিকের সামনে বছর জুড়ে থাকে খনাখন্দক এবং দূরাবস্থা। এই ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী জানান, ভারী যানবাহন চলাচল অনুপযোগী সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করলে এসকল সড়ক টেকসঁই হয় না। এগুলো আরসিসি মানের সড়ক উন্নিত করার পরিকল্পনা চলছে এবং ভারী যানবাহন চলাচল উপযোগী করে তোলা হবে। পীচ ঢালা রাস্তা থেকে আরসিসি রাস্তা টেকসঁই আমরা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে আরসিসি রাস্তা করার পরিকল্পনা হাতে নিব। কিছুদিনের মধ্যে ভাঙ্গা সড়কগুলো রিপেয়ারিং হবে। অবশ্যই কিছু কিছু সড়কের কাজ চলছে বলেও তিনি জানান।
আপনার মন্তব্য লিখুন