মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:৫৮ অপরাহ্ন
সমর ডেস্ক প্রতিবেদক :
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাবে হেরে প্রধানমন্ত্রীত্ব হারিয়েছেন ইমরান খান। দেশটির জাতীয় পরিষদে ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এই বিষয়ে বিতর্ক হয় এবং শেষ পর্যন্ত অনেক নাটকীয়তা শেষে অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটি হয়।
জানা যায়, স্পিকার আসাদ কায়সার তার পদ থেকে পদত্যাগ করার পর চেয়ার প্যানেলের সদস্য আয়াজ সাদিক এই অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন।
আয়াজ সাদিক ভোটের প্রক্রিয়া শেষে শনিবার দিবাগত রাতে ঘোষণা করেন, ১৭৪ জন সদস্য এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। ফলে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে পাস হয়েছে।
পাকিস্তানের স্পিকার আসাদ কায়সারের পদত্যাগ : ফলাফল ঘোষণার পর স্পিকার শাহবাজ শরীফকে বক্তৃতা দেওয়ার অনুরোধ জানান। শাহবাজ বলেন, আমরা এই নতুন দিনটি দেখার অপেক্ষায় ছিলাম। স্রষ্টাকে ধন্যবাদ।
এর আগে, পাকিস্তানের গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল- আজ সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া এই অধিবেশন মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে।
পকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, ইফতার বিরতির পর রাত ৮টায় অধিবেশন শুরু হওয়ার পর স্পিকার আসাদ কায়সার এশার নামাজের জন্য রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলবি করেন।
জানা যায়, পার্লামেন্টের সচিবালয়ের সূত্রগুলো বলছে, রাত ১২টা পর্যন্ত এই অধিবেশন গড়াবে। ইচ্ছে করেই অধিবেশন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। অধিবেশনে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকারের মন্ত্রীরা বক্তব্য দীর্ঘ করার চেষ্টা করছেন।
সকালে অধিবেশনের শুরুতে বক্তব্য রাখেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সভাপতি শাহবাজ শরিফ এবং পরে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশী।
এরপর অধিবেশনে হট্টগোল শুরু হলে স্পিকার আসাদ কায়সার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করেন। পরে জানানো হয়, জোহরের নামাজের বিরতির পর অধিবেশন শুরু হবে।
পরে নির্ধারিত সময়ের ২ ঘণ্টা পর ফের অধিবেশন শুরু হয়। ডন জানায়, অধিবেশন বিরতিতে পার্লামেন্টে বিরোধীদল ও সরকারি দলের সদস্যরা বৈঠক করায় নির্ধারিত সময়ে অধিবেশন শুরু হতে দেরি হয়েছে। তবে অধিবেশনে ইমরান খানকে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি।
জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন বিরোধীদলীয় নেতা শাহবাজ শরীফ, পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি, পিএমএল-এন সহ-সভাপতি মরিয়ম নওয়াজসহ অনেকেই।
উল্লেখ্য, গত ৭ মার্চ জাতীয় পরিষদের সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেয় বিরোধী দলগুলো। এরপর ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্পিকার। প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির জন্য ৩ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা দিয়ে খারিজ করে দেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি। একইসঙ্গে অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন তিনি।
টানা ৫ দিনের দীর্ঘ শুনানি শেষে ওই অনাস্থা ভোট খারিজ ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে বৃহস্পতিবার সর্বসম্মতভাবে রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের বেঞ্চ। একইসঙ্গে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর শনিবার ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, অনাস্থা প্রস্তাবের সুরাহা না করা অবধি পার্লামেন্টের অধিবেশন মুলতবি করা যাবে না।
আপনার মন্তব্য লিখুন